মাথার খুলিতে মুখমণ্ডলীয় অংশে নাসাগহবরের দুপশে অবস্থিত বায়ুপূর্ণ বিশেষ গহ্বরকে সাইনাস বলে। সাধারণ অবস্থায় সাইনাসগুলো বায়ুপূর্ণ মিউকাস পর্দায় আবৃত এবং ক্ষুদ্র নলির মাধ্যমে নাসা গহবর তথা শ্বাসনালীর সাথে যুক্ত থাকে। কোন কারন এই সাইনাসের বাতাসের বদলে তরল পদার্থের পূর্ণ থাকলে এই তরল পদার্থ যদি ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক এ সংক্রামিত হয় তখন সাইনাসের প্রদাহ সৃষ্টি হয়। আরেক একেই সাইনুসাইটিস বলে।
সাইনোসাইটিস দুই প্রকার।
১. একিউট সাইনুসাইটিস: এর স্থায়িত্ব 4 থেকে 8 সপ্তাহ
২. ক্রনিক সাইনুসাইটিস: এর স্থায়িত্ব দুই মাসের বেশি
সাইনুসাইটিস রোগের কারণ:
১. সাইনসিটি বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ( human respiratory syncytial virus, parainflueza virus), ব্যাকটেরিয়া ( streptococcus, pneumoniae), এবং কিছু ক্ষেত্রে ছত্রাকের আক্রমণে সাইনুসাইটিস হতে পারে
২. ঠান্ডা জনিত কারণে, এলার্জি জনিত কারণে
৩. দাঁতের ইনফেকশন থেকে দাঁত তুলতে গিয়েও সাইনাসের সংক্রমণ হতে পারে
৪. যাদের হাঁপানি সমস্যায় ভোগে তাদের দীর্ঘস্থায়ী সাইনুসাইটিস দেখা যায়
৫. নাকের হাড় বাঁকা থাকলে অথবা মুখগহ্বরের টনসিল বড় হয়ে এ রোগ হতে পারে
৬. অপুষ্টির, পরিবেশ দূষণ ও ঠান্ডা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থাকার কারণেও এ রোগ হতে পারে
সাইনুসাইটিস রোগের লক্ষণ:
১. নাক থেকে হলদে বা সবুজ বর্ণের ঘন তরল বের হয়।
২. তীব্র মাথা ব্যথা।
৩. সাইনাসের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা।
৪. মাথার সাথে দাঁতের ব্যথাও হতে পারে।
৫. মুখমণ্ডল অনুভূতিহীন মনে হয়।
৬. কাশি হয়, রাতে কাশির তীব্রতা বাড়ে, গলা ভেঙ্গে যায়।
প্রতিকার:
১. গরম পানিতে ভিজিয়ে একখণ্ড কাপড় প্রতিদিন বারবার মুখমন্ডলে চেপে ধরা।
২. মিউকাস তরল করতে প্রচুর পানি পান করা।
৩. প্রতিদিন দুই থেকে চার বার নাক দিয়ে বাষ্প টেনে নেয়।
৪. আদ্রতা প্রতিরোধক ব্যবহার করা হয়।
৫. দিনে কয়েকবার ন্যাসাল স্যালাইন স্প্রে করা।
৬. মাথা নিচু করে শরীর বাঁকানো অনুচিত।
ঔষধ প্রয়োগ:
একিউট সাইনাস এর চিকিৎসা চিকিৎসায় ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে প্রয়োজনে দুই সপ্তাহের চিকিৎসা চলতে পারে। ক্রনিক সাইনাসের চিকিৎসা চলে দুই থেকে চার সপ্তাহ। ছত্রাকজনিত সাইনাসের চিকিৎসার জন্য ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এন্টিবায়োটিক সহ সমস্ত ঔষধ ব্যবহারের চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী হতে হয়।
Comments
Post a Comment